দুর্নীতি দমন কমিশনে(দুদুক)অভিযোগ দায়েরের পদ্ধতি-
দুর্নীতি দমন কমিশনের তফসিলভূক্ত অপরাধ সমূহের বিবরণসহ কমিশনের মাননীয় চেয়ারম্যান/ পরিচালক, বিভাগীয় কার্যালয়/ উপপরিচালক, সমন্বিত জেলা কার্যালয় বরাবর নিম্নবর্ণিত তথ্য সম্বলিত অভিযোগ দাখিল করা যাবে। এছাড়াও দুর্নীতি দমন কমিশনের এ অভিযোগ প্রেরণ করা যাবে।
দুদকে অভিযোগ দায়ের করতে হলে নিম্নোক্ত তথ্যাবলী প্রদান করবেন :
১. অভিযোগের বিবরণ ও সময় কালঃ
২. অভিযোগের সমর্থনে তথ্য-উপাত্ত এর বিবরণঃ
৩. অভিযুক্ত ব্যক্তির নাম, পদবী
![]() |
ও ঠিকানাঃ
৪. অভিযোগকারী (যদি থাকে) নাম ঠিকানা ও টেলিফোন নম্বরসহ অভিযোগ দাখিল করতে পারবে।
দুদকে অভিযোগ জানানোর পদ্ধতি
লিখিত অভিযোগ জানাতে :
১। 'চেয়ারম্যান/কমিশনার, দুর্নীতি দমন কমিশন, প্রধান কার্যালয়, ১ সেগুন বাগিচা, ঢাকা' বরাবর।২। 'বিভাগীয় পরিচালক, দুর্নীতি দমন কমিশন, বিভাগীয় কার্যালয়, ঢাকা/চট্টগ্রাম/রাজশাহী/খুলনা/বরিশাল/সিলেট/রংপুর/ময়মনসিংহ' বরাবর।৩। 'উপপরিচালক, দুর্নীতি দমন কমিশন, সমন্বিত জেলা কার্যালয় (অপরাধটি যে সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের অধীন সংঘটিত)' বরাবর।৪।ই-মেইল: chairman@acc.org.bd
৫। কমিশনের ভেরিফাইড ফেসবুক পেজ (Anti-Corruption Commission - Bangladesh)
মামলা কোথায় দায়ের হয়-
যেকোনো দুর্নীতির বিষয়ে মামলা বা এফআইআর করার ক্ষেত্রে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) নিজ কার্যালয়ে এজাহার দাখিল ও ওই এজাহারের ভিত্তিতে তদন্ত করার ক্ষমতা রয়েছে । দুদকের ওই বিধিমালা অনুযায়ী দুর্নীতি সংক্রান্ত বিষয়ে থানা সরাসরি মামলা রেকর্ড করতে পারে না। কেবলমাত্র জিডি হিসেবে গ্রহণ করতে পারে। থানা অভিযোগ (জিডি) পাঠিয়ে দেয় দুদকে। এরপর তার ভিত্তিতে অনুসন্ধানের পর দুদক মামলা করে। দুদকে এজহার দায়েরের পর সেটি সিনিয়র স্পেশাল জজ আদালতে উপস্থাপন পূর্বক আমলে গ্রহণের জন্য আবেদন করে, ক্ষেত্র বিশেষ আসামিকে গ্রেফতার দেখানোর আবেদন জানায়।
দুদকে মামলা হলে করণীয়-
কারো বিরুদ্ধে দুদকের মামলা হলে কীভাবে মামলার অভিযোগ থেকে মুক্তি পাবেন সে চিন্তাভাবনা করতে হবে। কারণ, অভিযুক্ত হলেই নিশ্চিত করে বলা যাবে না যে কেউ অপরাধী। আইনের চোখে অপরাধ প্রমাণিত না হওয়া পর্যন্ত অভিযুক্ত নিরপরাধ বলে গণ্য। অভিযুক্ত দোষী বা নির্দোষ, সেটি পরে প্রমাণিত হবে। কিন্তু প্রাথমিকভাবে যেন এ মামলা সুষ্ঠুভাবে মোকাবিলা করে ন্যায় বিচার নিশ্চিত হয় সে চেষ্টা করতে হবে।
দুদক মামলায় জামিন -দুর্নীতি সংক্রান্ত মামলায় অভিযুক্ত ব্যাক্তি আদালতে আত্মসমর্পণ করে কিংবা গ্রেফতার করে আদালতে প্রেরণ করা হলে আদালতের নিকট জামিন চাইতে পারেন।
আগাম জামিন -গ্রেফতার না হলে অনেক সময় হাইকোর্ট বিভাগে উপযুক্ত কারণ দেখিয়ে আগাম জামিন চাওয়া যায়। হাইকোর্ট বিভাগ আগাম জামিন সাধারণত নির্দিষ্ট মেয়াদ পর্যন্ত দিয়ে থাকেন। এ মেয়াদের মধ্যেই নিম্ন আদালতে গিয়ে জামিননামা সম্পাদনের জন্য আবেদন করতে হবে।
জামিন- আসামীকে গ্রেফতার করে যে আদালতে প্রেরণ করা হবে সে আদালতে কিংবা পর্যায়ক্রমে উর্ধতন আদালতগুলোতে আসামীর জামিন চাওয়ার অধিকার আছে। আদালত মামলার গুনাগুন বিবেচনায় এবং আসামীর জামিনের উপযুক্ত কোন গ্রাউন্ড থাকলে আদালত আসামীর জামিন মঞ্জুর করতে পারেন।
নির্দোষিতা প্রমাণের চেষ্টা -জামিন নেওয়ার চেষ্টার পাশাপাশি কিংবা জামিন নেওয়ার পর অভিযোগপত্র দাখিল করার আগে উপযুক্ত তথ্যপ্রমাণ দিয়ে আপনার বিরুদ্ধে যে অভিযোগটি দায়ের করা হয়েছে, তা যথাযথ নয় মর্মে প্রমাণের চেষ্টা করা যায়।তদন্তকারী কর্মকর্তা আপনার বিরুদ্ধে অভিযোগের সত্যতা না পেলে আপনাকে নির্দোষ দেখিয়ে চূড়ান্ত প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করবেন। চার্জশিট বা অভিযোগপত্র হয়ে গেলে আপনার মামলাটি বিচারিক আদালতে বদলি হবে। অভিযোগ গঠনের দিন আপনাকে হাজির হয়ে নতুন করে পূর্বশর্তে জামিন চাইতে হবে এবং জামিননামা সম্পাদন করতে হবে। তখন আপনি মামলা থেকে অব্যাহতির জন্য আবেদন করতে পারেন। অব্যাহতির আবেদন নাকচ হলে উচ্চ আদালতে প্রতিকার চাইতে পারেন।
অন্যান্য বিষয়াবলী -
যদি এমন হয় যে আপনি জানতে পারলেন না, আপনার বিরুদ্ধে এজাহার হয়েছে। পুলিশ এসে আপনাকে গ্রেপ্তার করল। আপনাকে থানায় নিয়ে গেল। গ্রেপ্তারের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে আপনাকে আদালতে প্রেরণ করা হবে। তখন আপনার আইনজীবীর মাধ্যমে জামিনের আবেদন করতে হবে। যদি পুলিশ রিমান্ড চায়, তাহলে আপনার আইনজীবীর মাধ্যমে রিমান্ড বাতিলের জন্য আবেদন করবেন। যদি জামিন দেন আদালত, তাহলে একজন পরিচিত জামিনদারের জিম্মায় আপনার জামিননামা সম্পাদন করতে হবে। যদি জামিন না হয়, তাহলে পর্যায়ক্রমে উচ্চ আদালতে আবেদন করতে হবে।
মামলায় জামিন না নিয়ে পলাতক থাকলে-
আপনাকে মামলায় আসামী করা হলে এবং কোনো কারণে আপনার মামলায় আদালতে হাজির হয়ে জামিন না নিয়ে পলাতক থাকেন তাহলে আপনার নামে পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি হতে পারে। এতে হাজির না হলে আপনার মালামাল ক্রোকের আদেশ হতে পারে এবং আপনার অনুপস্থিতিতেই বিচার হতে পারে। এবং মামলার রায় হয়ে গেলে ভবিষ্যতে যেকোনো সময় আপনি অত্র মামলায় গ্রেফতার হতে পারেন। তাই মামলা হলে আদালতে হাজির হয়ে নিজের নির্দোষিতা কিংবা সাজা কমানোর চেষ্টা করা উচিত।
★★★
সর্বদা আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হোন,নিজে আইন মেনে চলুন,অন্যকেও আইন মেনে চলতে উৎসাহিত করুন।সবাই আইন ও নিয়ম মেনে চলে একটি সুন্দর সমাজ তথা দেশ ঘটনে অবদান রাখুন।
এম আমির উদ্দিন(আমির)
এডভোকেট,
ঢাকা জজ কোর্ট
সম্পাদক, আইন আদালত সবার তরে।
প্রয়োজনে - 01673- 240243,
https://www.facebook.com/amirdcph
No comments:
Post a Comment